জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
ওই সময় তারা আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বুধবার তারা সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাতে তারা অধ্যাপক ইউনূসকে বাবা-মায়ের সালাম ও শুভকামনার বার্তা পৌঁছে দেন।
গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে আবু সাঈদ ও অন্যান্য শহীদদের আত্মত্যাগের কথা যখন বলছিলেন, তখন আবু সাঈদের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়ে বলে জানান দুই ভাই।
শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘বিপ্লবে তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আপনি তুলে ধরেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার এক দিন পরই রংপুরে আমাদের গ্রামে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এতে আমরা সম্মানিত বোধ করেছি।’
আজ মঞ্চে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দেয়ার সময় দুই ভাইও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
তারা শহীদ আবু সাঈদের নামে একটি ফাউন্ডেশন তৈরির কথাও জানান এবং গ্রামে একটি ‘মডেল মসজিদ’ ও একটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির আশা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তারা।
ছোট ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘ফাউন্ডেশনটি দরিদ্র এবং জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের জন্য কাজ করবে।’
অধ্যাপক ইউনূস শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।’
ইউনূস বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন, তা বাংলাদেশ কখনও ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।’
আবু সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।
‘আমি সবসময় তোমার সাথে থাকব। তোমার বাবা-মাকে আমার সালাম জানাবে।’
গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ঠিক এক দিন পর গত ৯ আগস্ট রংপুরে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা সে সময় শহীদ আবু সাঈদের কবরও জিয়ারত করেন।